Tuesday 20 May, 2025

ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের চেষ্টা ট্রাম্প প্রশাসনের

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:43, 17 May 2025

ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের চেষ্টা ট্রাম্প প্রশাসনের

ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের চেষ্টা ট্রাম্প প্রশাসনের

প্রায় ১০ লাখ গাজাবাসীকে লিবিয়ায় স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমন দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ।

সংশ্লিষ্ট পাঁচজন কর্মকর্তার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজের রাষ্ট্র থেকে তার নাগরিকদের বাস্তুচ্যুত করার এই নীল নকশার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার কর্মীরা। তারা ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

পুনর্বাসন পরিকল্পনার বিষয়ে সরাসরি অবগত তিন কর্মকর্তা জানান, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে লিবিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য লিবিয়ার বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন।

তারা আরও বলেন, বিনিময়ে লিবিয়ার জব্দকৃত শত শত কোটি ডলার মূল্যের বৈদেশিক সম্পদ মুক্ত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এই সম্পদ প্রায় এক দশক আগে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় আটকে দেওয়া হয়েছিল।

তবে কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানো হয়নি। তারা জানান, পরিকল্পনার অগ্রগতি সম্পর্কে ইসরায়েল সরকার অবগত রয়েছে।

এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কীভাবে অর্থায়ন করা হবে বা কখন থেকে তা শুরু হতে পারে—সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এনবিসি একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কাছে মন্তব্য চাইলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি।

পরে, প্রতিবেদন প্রকাশের পর একজন মার্কিন কর্মকর্তা এনবিসির দাবিকে “মিথ্যা ও ভিত্তিহীন” বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের কোনো পরিকল্পনা কার্যকর করার বাস্তবতা নেই এবং এমন কোনো আলোচনাও হয়নি।”

এদিকে গাজা শাসনকারী সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা বাসেম নাইম জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের কোনো পরিকল্পনা তারা জানেন না।

এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল সরকারও।

অন্যদিকে, নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাওয়া লিবিয়ায় এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দেশটিতে বর্তমানে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার বিদ্যমান—পশ্চিমাঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দেবেইবাহ এবং পূর্বাঞ্চলে সামরিক নেতা খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি। এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছে।

ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে দেবেইবাহ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। একইভাবে হাফতারের বাহিনীর তরফেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।