Wednesday 21 May, 2025

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 23:08, 19 May 2025

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ

স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্লাস্টিকসহ অন্তত সাত ধরনের পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত।

শুক্রবার ১৬ মে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পরদিনই ১৮ই মে, শনিবার সীমান্তে আটকে গেছে বহু পণ্যবাহী ট্রাক। এতে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন রপ্তানিকারকরা।

তাদের আশঙ্কা, এখন থেকে পণ্য রপ্তানি করতে হলে সমুদ্রপথেই যেতে হবে। এতে সময় যেমন বাড়বে, খরচও হবে প্রায় ৫ গুণের বেশি। ফলে ভারতের সেভেন সিস্টার্সসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজার হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে দেশীয় কোম্পানিগুলো।

ভারত নিয়ে ইউনূস সরকারের বিতর্কিত মন্তব্য এবং বিভিন্ন কূটনৈতিক সিদ্ধান্তের বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় ভারত এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে দেশটির পক্ষ থেকে।

বাংলাদেশ প্লাস্টিকপণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি সামিম আহমেদ বলছেন, “এত খরচ করে সমুদ্রপথে পণ্য নেওয়া প্রতিযোগিতায় টিকবে না। আগে স্থলবন্দরেই রপ্তানি হত, সমুদ্রপথ আমরা কখনো ব্যবহার করিনি।”

তথ্য অনুযায়ী, এতদিন আখাউড়া, চাতলাপুর, শেওলা, তামাবিলসহ ছয়টি স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য পাঠানো হতো।

২০ ফুটের একেকটি কার্গো ট্রাকের ভাড়া যেখানে ১৮ থেকে ২৫ হাজার টাকা ছিল, এখন সেই পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কলকাতা পাঠাতে লাগবে অতিরিক্ত ১ লাখ টাকা। এরপর আবার আলাদা ভাড়ায় আসাম, মেঘালয়, করিমগঞ্জ বা আগরতলায় নিতে হবে।

ড্যানিশ ফুডের হেড অব বিজনেস দেবাশীষ সিংহ বলছেন, “আমাদের পণ্য ভারতের মূল ভূখণ্ডের কোম্পানিগুলোর তুলনায় সাশ্রয়ী খরচে পৌঁছাত। ভারতের এ সিদ্ধান্ত সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলে আমাদের প্রবেশ ঠেকাতেই এসেছে বলেই মনে হচ্ছে।”

তার ভাষায়, “বর্ডার পার হলেই আমরা ত্রিপুরা, গৌহাটি, মেঘালয়, মিজোরামে পৌঁছাতাম। এখন সেটা ঘুরে ঘুরে নৌপথে নিতে হবে। প্রতিবার গাড়ি পাল্টাতে হবে, অতিরিক্ত সময় ও খরচ—সব মিলিয়ে টেকা মুশকিল।”

প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারালে ৫০টির বেশি প্লাস্টিকপণ্য রপ্তানিকারক কোম্পানি এই বাজার হারাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিপিজিএমইএ সভাপতি।

অন্যদিকে আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের হেড অব মার্কেটিং মাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, “আমরা ভারতে চার-পাঁচ লাখ কার্টন কোমলপানীয় রপ্তানি করতাম। এ সিদ্ধান্তে সব অর্ডারের উৎপাদন স্থগিত করেছি।”

তিনি দাবি করেন, “এতে শুধু বাংলাদেশি কোম্পানিরা না, ভারতের ভোক্তারাও কম মূল্যে ভালো পণ্য থেকে বঞ্চিত হবে। আশা করি, সরকার দ্রুত আলোচনায় বসবে।