
এক মাসে পুঁজিবাজার থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা গায়েব !
দেশের পুঁজিবাজারে টানা ধসের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছেন ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি এপ্রিল মাসে ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে ১৫ দিনই সূচক পতনে লালবৃত্তে ছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। মাসের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫ হাজার ২১৯ পয়েন্টে, মাস শেষে তা নেমে এসেছে ৪ হাজার ৯১৭ পয়েন্টে- অর্থাৎ ৩০২ পয়েন্টের পতন। বাজারে তারল্য সংকট, আস্থার ঘাটতি এবং দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ধস নিয়ন্ত্রণে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পদক্ষেপ পর্যাপ্ত ছিল না। বরং তারা প্রয়োজনীয় সংস্কার, দক্ষ জনবল নিয়োগ ও নীতিগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য এ এফ এম নেসারউদ্দীন মন্তব্য করেন, “বিএসইসির কাঠামোগত দুর্বলতা এখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিচালক ও ডেপুটি পরিচালক পর্যায়ে দক্ষ লোকবল নেই। যারা নিচের স্তরে আছে, তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না—শুধু ফাইল চালায়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, “পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি আস্থা তৈরির কোনো চেষ্টা নেই। সরকারের নীতি-নির্ধারকদের মনোযোগও বাজারের দিকে নেই। বরং তারা সংকটকেই অবহেলা করছে।”
অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত বলেন, “পুঁজিবাজারে যখন বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকে না, তখন যেকোনো ইতিবাচক পদক্ষেপও ফল দেয় না। সরকার এবং বিএসইসি উভয়ই তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনা না করলে বাজার আরও অস্থিতিশীল হবে।”
পুঁজিবাজারে বর্তমান অস্থিরতার জন্য বিশেষজ্ঞরা সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতাকেই বড় কারণ হিসেবে দেখছেন। বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি এবং বারবার নীতির পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের আস্থা চুরমার করে দিয়েছে।