Thursday 05 June, 2025

এবার ড ইউনুসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতীয় আধিপত্য

মুক্তমঞ্চ ডেস্ক

প্রকাশিত: 20:23, 3 June 2025

এবার ড ইউনুসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতীয় আধিপত্য

এবার ড ইউনুসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতীয় আধিপত্য

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইজারা ঘিরে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের ৩৪ জন কর্মকর্তার মধ্যে ২১ জন ভারতীয় নাগরিকের বন্দরে প্রবেশে শ্রমিক ও স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইজারার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত না হলেও এই পদক্ষেপকে ‘অনভিপ্রেত আধিপত্যের চেষ্টা’ হিসেবে দেখছেন অনেকে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এনসিটির ইজারা প্রক্রিয়া এখনও ‘জিটুজি’ (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু ডিপি ওয়ার্ল্ডের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে টার্মিনালে ঢুকে পরিদর্শন ও প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছেন। এতে শ্রমিকদের মধ্যে চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা ছড়িয়েছে। শ্রমিক নেতা আবদুল হক বলেন, “ইজারার কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিদেশিরা বন্দরে ঢুকে কার্যক্রম শুরু করেছে। এটা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে।”

গত এপ্রিলে ডিপি ওয়ার্ল্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে গেটপাসের জন্য আবেদন করেন। এরপরই ৩৪ জনের একটি দলকে টার্মিনালে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এই দলে ভারতীয় নাগরিক ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও ফিনল্যান্ডের নাগরিক রয়েছেন। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, এই কর্মকর্তারা টার্মিনালের যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করছেন এবং কক্ষ ব্যবহারের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, যা তাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক সংগঠনের নেতা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “এনসিটি আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটি বিদেশিদের হাতে দেওয়া যাবে না।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আগামী ১৬ জুনের মধ্যে ইজারার সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে ২২ জুন সকাল ৯টা থেকে চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে।”

২০০৭ সালে চালু হওয়া এনসিটি বাংলাদেশের মোট কন্টেইনার পণ্যের প্রায় ৫৫% পরিচালনা করে এবং বছরে ১,০০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আনে। বর্তমানে সাইফ পাওয়ারটেক এটি পরিচালনা করছে, যার মেয়াদ ৬ জুলাই শেষ হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে।

ডিপি ওয়ার্ল্ডের বাংলাদেশ শাখার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তাদের বন্দরে প্রবেশকে অনেকে ভূ-রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত গুরুত্ব বিবেচনায় এই ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।