
করিডোর, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ইস্যুতে সেনাবাহিনী আপসহীন
সেনাবাহিনী জানায়, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৫৯৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচ-এ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে, যার মধ্যে ৩৬ জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়—এমন কোনো কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না বলে জানিয়েছেন লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
সোমবার (২৬ মে) সেনা সদরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে করিডোর ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করিডোর, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ইস্যুতে সেনাবাহিনী আপসহীন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে সবার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে।’
মব তৈরির বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ যদি মব তৈরি করে বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সেনাবাহিনী।’ চট্টগ্রামের একটি কারখানায় কেএনএফ-এর পোশাক উদ্ধারের বিষয়ে লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনাটি উদ্বেগজনক। সেনাবাহিনী গভীরভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।’
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র ও ৭০৯ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও গত এক মাসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত মোট ১ হাজার ৯৬৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া গত ২০ মে ভাষানটেক এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ২৮ রাউন্ড গুলিসহ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিটলু বাবুসহ তার গ্যাং-এর দশজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে।
এতে বলা হয়, বিগত ৪০ দিনে যৌথ অভিযানে ৪৮৭ জন মাদক ব্যবসায়ী এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৪ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিগত ৪০ দিনে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য, যেমন ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, অবৈধ মদ ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া বিগত এক মাসে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভেজাল শিশু খাদ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ জেলি মিশ্রিত চিংড়িসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ভেজাল খাদ্যদ্রব্যের বিরুদ্ধে এমন অভিযান স্থানীয় জনগণের মাঝে স্বস্তির আস্থা সৃষ্টি করেছে।