
অস্ট্রেলিয়ায় রেকর্ড বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা, নিহত ২
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্তত আরও দুই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। ইতোমধ্যেই ৫০,০০০-এর বেশি মানুষকে সেখানকার বিভিন্ন এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট দুর্যোগকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। রাজ্যের জরুরি সেবার কমিশনার জানিয়েছেন, এই ধরনের বৃষ্টিপাত মানুষের স্মৃতিতে এই প্রথম।
২,০০০-এরও বেশি উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে কাজ করছেন। অনেক মানুষকে বাড়ির ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করতে হয়েছে।
এনএসডব্লিউ প্রিমিয়ার ক্রিস মিনস জানান, “অবস্থা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সামনের দিনগুলোতেও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।” মধ্য উত্তর উপকূলে পৃথকভাবে দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। এক নারী গাড়ি পানিতে আটকে গেলে নিখোঁজ হন এবং এক পুরুষ বন্যার মধ্যে হাঁটতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি।
১০০-র বেশি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাজারো বাড়ি ও ব্যবসায়িক স্থাপনায় বিদ্যুৎ নেই। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে গৃহত্যাগকারীদের জন্য।
পুলিশ জানিয়েছে, হেলিকপ্টারে ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৮ জন ছিলেন পানিতে তলিয়ে যাওয়া বাড়ি ও রাস্তায় এবং ৪ জন একটি সেতু থেকে। এছাড়া চারটি কুকুর ও একটি বিড়ালকেও উদ্ধার করা হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা টারি শহর, যেখানে একটি প্রধান নদীর পানি ৬.৩ মিটার ছাড়িয়ে গেছে — যা প্রায় শত বছর আগের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
বুধবার, মোটো এলাকায় একটি বাড়ি থেকে ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ডেভিড নোলস হিসেবে শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার আরেকজন, ত্রিশোর্ধ্ব এক পুরুষের মৃতদেহ পাওয়া যায় রোজউড এলাকার বন্যাজলে।
আগামী শুক্রবারের মধ্যে কিছু এলাকায় আরও ৩০০ মিমি (প্রায় ১২ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। মধ্য উত্তর উপকূলে প্রায় ১০,০০০ বাড়ি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা ৩০০-র বেশি উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। “বৃষ্টির পরিমাণ এবং পানির প্রবাহ এতটাই বেশি যে অনেক এলাকা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে,” বলেন এসইএস-এর সহকারী কমিশনার কলিন ম্যালোন।
নিউ সাউথ ওয়েলস জরুরি সেবা মন্ত্রী জিহাদ ডিব বলেন, “আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই ধরনের রেকর্ড কেউ চায় না, কিন্তু বাস্তবতা হলো—এই অঞ্চলে এর আগে কখনও এত বেশি বৃষ্টি ও বন্যা দেখা যায়নি।”