Saturday 24 May, 2025

‘সংযত হও, নাহলে পদত্যাগ করবো’, ছাত্র উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে ইউনূস

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:55, 22 May 2025

‘সংযত হও, নাহলে পদত্যাগ করবো’, ছাত্র উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে ইউনূস

‘সংযত হও, নাহলে পদত্যাগ করবো’, ছাত্র উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে ইউনূস

ড. ইউনূস কী করবেন এখন? সামনে তার পথ খুবই সংকীর্ণ। একদিকে সেনাবাহিনীর চাপ, অন্যদিকে নিজের উপদেষ্টাদের বিভ্রান্তিমূলক ভূমিকা। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ইতিমধ্যেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাদের ডেকে কড়া ভাষায় বলেছেন, “সংযত হও, নাহলে আমি পদত্যাগ করবো।”

বৃহস্পতিবার সরকার ঘনিষ্ট জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী এহসান জানিয়েছেন, ড. ইউনূস পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি অনড় আছেন, এমনকি ঘনিষ্ঠরা ও ছাত্ররা পদত্যাগ ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

খোমেনী বলেন, “ড. ইউনূস, আপনি অকৃতজ্ঞতার শাস্তি পেলে এটিই ন্যাচারাল পানিশমেন্ট।”

এদিকে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে ইউনূস সরকারের মতবিরোধ গভীর হচ্ছে। সেনাপ্রধান নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে করার দাবি তুলেছেন, যা সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট সমর্থন পায়নি। ইউনূস এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সরকারের সঙ্গে বেশ কিছু মৌলিক বিষয়ে মতপার্থক্য জানিয়েছেন। ওয়াকারের ভাষায়, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে।” কিন্তু ইউনূস তা কখনো স্পষ্টভাবে বলেননি।

রাখাইনে মানবিক করিডোর ইস্যুতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিবকে এনে এর যথার্থতা প্রমাণ করতে চাইলেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেননি ইউনূস।

সেনাপ্রধান স্পষ্টভাবে বলেছেন, “কোনও করিডোর নয়, এটা জাতির জন্য আত্মঘাতী হবে।” যদিও নিরাপত্তা উপদেষ্টা দাবি করেন, করিডোর নিয়ে আলোচনা হয়নি—যা অনেকেই ‘হাস্যকর’ বলছেন।

৫ই আগস্টের পর দেশে ‘মবতন্ত্রে’র মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। সেনাপ্রধান এ নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এখন থেকে আর সহ্য করা হবে না।”

চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুতেও সেনাপ্রধান সরাসরি বলেন, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার জনগণ ও নির্বাচিত সরকারের, ইউনূস সরকার যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল, তা গ্রহণযোগ্য নয়।

সঙ্কটে উপদেষ্টা পরিষদ, পদত্যাগ দাবি এনসিপি ও বিএনপির

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউনূস সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এনসিপি অন্তত তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে—ড. সালেহউদ্দিন, ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও ড. আসিফ নজরুলের। তাদের ভাষায়, এরা সবাই বিএনপির ঘনিষ্ঠ।

বিএনপি সরকারের ভিতরে থাকা আরও দুই উপদেষ্টার—আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের—পদত্যাগ দাবি করেছে।

পরিস্থিতির মোড় এখন দুটি দিকেই যেতে পারে—ভালোর দিকে বা জাতিগত বিশৃঙ্খলার দিকে। নির্বাচনের রোডম্যাপ না এলে পরাজিত শক্তি আবারো দৃশ্যপটে ফিরে আসতে পারে, এমন সতর্কবার্তাও রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।