Saturday 10 May, 2025

এবার শামীমের বিরুদ্ধে আরেক অভিনেত্রীর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:40, 8 May 2025

এবার শামীমের বিরুদ্ধে আরেক অভিনেত্রীর অভিযোগ

এবার শামীমের বিরুদ্ধে আরেক অভিনেত্রীর অভিযোগ

অভিনেতা শামীম হাসান সরকারকে নিয়ে হুট করেই শুরু হয়েছে আলোচনা। তার বিরুদ্ধে মারধর এমনকি ধর্ষণের হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন নবাগত অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা প্রিয়া। শুধু তাই নয়, অভিযোগ করা হয়েছে মাদক গ্রহনেরও।   

এই ঘটনার রেশ যেতে না যেতেই এ শামীম হাসান সরকার অভিনেত্রী অহনার প্রেম জীবন নিয়ে মন্তব্য করে বসেন।

যার ফলে অহনাও বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত দুইটার দিকে ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাসে লেখেন,‘ডাবল টাইমিং? আপনি যা বলেছেন ঠিক বলেছেন কি? নিজের দোষ ঢাকতেই কী এমন অপবাদ দিয়েছেন? এই ঘটনার পরই শামীমের বিরুদ্ধে শুটিংসেটে দুই বছর আগের এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী, বাচিক শিল্পী ও সঞ্চালক সিফাত বন্যা। যেখানে তিনি শামীম হাসান সরকারকে ‘ভাঁড়’ বলে সম্বোধন করেছেন। একইসঙ্গে অভিনেত্রী দাবি করেছেন, শামীমের ব্যবহারের কারণে তাকে জুতাপেটা করতে চেয়েছিলেন তিনি। 
 
শামীম হাসান সরকার নামে একজন ভাঁড় আছে।

সে গতকাল একজন অভিনেত্রীকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে। সেই সেটের ডিরেক্টর থেকে শুরু করে সবাই নাকি চুপ ছিল! চিন্তা করেন এদের অবস্থা! এদের মানসিকতা!
অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়ার ঘটনার স্মৃতি টেনে তিনি লিখেছেন, গত দুই বছর আগে রাজধানীর উত্তরায় একটি শুটিং হাউজে বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন ওর (শামীম) সাথে আমার কাজ পড়ে। আমি এডিকে (এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর) বলি আমাকে ২টার মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। কারণ, চারটার সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে আমাকে আবৃত্তি করতে হবে।

সিফাত লেখেন, সেদিন আমার খুব জ্বর ছিল। মেকআপ রুমে যাওয়ার পর ওর সাথে (শামীম) এডি আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। ভাঁড়ের সাথে ওই দিনই আমার প্রথম কাজ ছিল। পরিচয়ের পরে হাই-হ্যালো হলো এবং এডি ওকে বলেওছিল আমার খুব জ্বর। তাই এসিটা কমিয়ে দিলাম।

মেকআপ রুমে আমি, ভাঁড়, আর মেকআপ আর্টিস্ট। আমি বসে বসে স্ক্রিপ্ট পড়ছি। আর ভাঁড় জোরে জোরে ইংরেজি গান, হিন্দি গান বাজাচ্ছে। একটু পর এসিটাও বাড়িয়ে দেয়। এডি যে ওকে বলে গেল আমার জ্বর তাতে ওর কোনো মাথাব্যথা নেয়। আমার মেজাজ খারাপ  হচ্ছিল। তবুও সিনিয়র যেহেতু আস্তে করে উঠে গিয়ে বললাম ভাইয়া আমার তো খুব জ্বর এসিটা কমালে খুব ভালো হতো। তাছাড়া গানের সাউন্ড নিতে পারছি না আর আজ বুদ্ধিজীবী দিবস চলুন বাংলা গান শুনি। এ কথা বলতেই ও মেকআপ আর্টিস্টের সামনেই আমাকে বলে আপনার জ্বর আমি কি করবো! আপনি বাইরে যান। আর আপনি আমাকে ইন্টেলেকচুয়ালিটি শেখাচ্ছেন! মানে একদম চেঁচিয়ে। মনে হচ্ছিল সে পারলে গায়ে হাত তুলবে।

সিফাত বলেন, একজন নারী সহকর্মীর সাথে তার এমন আচরণ আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। স্বাভাবিক বিষয় শুরুতে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। কিন্তু পরে বলেছি মেকআপ রুম আপনার একার নয়। মেকআপ রুম আমাদের সবার। এক কথায় দুই কথায় দুজনেই কথা-কাটাকাটি হয়। ডিরেক্টর এবং এডি এসে দুইজনকে দুই রুমে নিয়ে যায়। পরে ওকে ঠান্ডা করে, আমাকেও। এরপর ও আমার সাথে কাজ করবে বলে কিন্তু আমি বলেছিলাম এক কোটি টাকা দিলেও আমি ওর সাথে কাজ করবো না। সেট ছেড়ে চলে এসেছিলাম।

এই ঘটনায় অপমানিত বোধ করছিলেন সিফাত। তার কথায়, আমি তো ডিরেক্টর আর এডির জন্য ওখানে আর কথা বলতে পারলাম না। সেও পারেনি। সবকিছু মিলে সেটে অনেক কিছু ঘটলেও আমাদের আগে কাজের কথা চিন্তা করতে হয় কারণ টাকার কাজ। অনেক ইনভেস্টমেন্টের কাজ। সবকিছু মিলিয়ে অনেক কিছু সহ্য করে চুপ থাকতে হয়। আমি চলে আসি। তারপর জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করি। আমি একজন শিল্পী। আমাকে মেকআপ আর্টিস্টের সামনে রুম থেকে বের হয়ে যান বলাটা মাথা থেকে সরাতেই পারছিলাম না। চূড়ান্ত অপমানই করেছিল একজন নারী সহকর্মী হিসেবে।

শুটিংসেট থেকে বের হয়ে শামীমকে ফোনকল দিয়ে জুতাপেটা করতে চেয়েছিলেন, এমনটা উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, শুটিংয়ের পরের দিন ওর (শামীম) জন্মদিন ছিল। মোবাইল খোলার পরেই দুপুরে প্রথম কলটা আমার যায়। আমি ওকে বলি গতকাল তো তোকে আর কিছু বলতে পারিনি। তোকে আমি জুতা দিয়ে পিটাইতে চাই, ইত্যাদি ইত্যাদি। ২ মিনিট কথা বলার পরে ও কেটে দেয়। এটা নিয়ে ডিরেক্টরকে আবার বিচারও দেয়, হা হা হা।

তিনি যোগ করেন, অনেকেই বলতে পারে আমি পরে এটা ঠিক করিনি। তবে একজন নারী সহকর্মী হিসেবে আমার সাথে সে যে ধরনের রক্তচক্ষু নিয়ে কথা বলেছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। কোথাও এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভও নেই। আর আমি আমার অপমান মানতে পারছিলাম না। তাই আমি এটা করেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল ডিরেক্টর এডি না থাকলে ও আমার গায়ে হাত তুলতে পারে। আমি ট্রমায় পড়ে গিয়েছিলাম।

সিফাত মনে করেন, সেদিন তিনি সঠিক কাজটাই করেছিলেন। তার ভাষায়, ‘ডিরেক্টর ভাইয়া এবং এসেস্টেন্ট ডিরেক্টর দুইজনেই খুব ভালো। তারা আমাকে সরি বলেছিল। ঘটনার সময় আমাকে এবং ওকে দুজনকেই থামিয়েছে। তাই সংগত কারণেই আমি তাদের নাম বলছি না। তবে ওর জন্মদিনে জুতা দিয়ে পিটাইতে চেয়ে সেরা উপহারটা দিয়েছিলাম। শুটিং সেটেই আমি বলেছিলাম আপনি তো একজন ইউটিউবার। মোবাইলে ওকে ভাঁড় বলেছিলাম। তারপর আমার শান্তি হয়েছিল।