Friday 09 May, 2025

বঙ্গবন্ধুকন্যার বাণী: রবীন্দ্রনাথ থেকে শক্তি নিয়ে আবার জাগতে হবে

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:36, 8 May 2025

বঙ্গবন্ধুকন্যার বাণী: রবীন্দ্রনাথ থেকে শক্তি নিয়ে আবার জাগতে হবে

বঙ্গবন্ধুকন্যার বাণী: রবীন্দ্রনাথ থেকে শক্তি নিয়ে আবার জাগতে হবে

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে এক অনুপ্রেরণাদায়ী বাণী দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বিশ্বকবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু একজন কবি নন, তিনি বাঙালি জাতিসত্তার অন্যতম ভিত্তি, আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রেরণা।”

বাণীতে তিনি রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য, সংগীত, চিত্রকলাসহ বহুবিধ সৃজনশীলতার কথা তুলে ধরে বলেন, “সাহিত্যের প্রায় সর্বশাখায় অনন্য দ্যুতি ছড়ানো এই মানুষটি বাঙালির মননজগৎকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বপরিসরে।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এই পথেই অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা করেন বাঙালির রাজনৈতিক অস্তিত্ব।

বাণীতে উঠে এসেছে পাকিস্তান আমলে রবীন্দ্রচর্চার ওপর চাপিয়ে দেওয়া নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গও। শেখ হাসিনা স্মরণ করিয়ে দেন ১৯৬৭ সালে রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করার ঘটনা এবং বঙ্গবন্ধুর সেই প্রতিবাদী ভাষণ—“রবীন্দ্রনাথের লেখা নিষিদ্ধ করা হলে আমরা সেই নিষেধ মানি না। আমরা রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইবই।” পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে ‘আমার সোনার বাংলা’ বেছে নেওয়ার মধ্যে দিয়ে সেই চেতনারই পূর্ণতা ঘটান বঙ্গবন্ধু।

বাণীতে তিনি বলেন, “আজও যখন একই রকম অপশক্তি দেশের সংস্কৃতিকে নিঃস্ব করে দিতে চায়, তখন রবীন্দ্রচর্চা হয়ে ওঠে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ। কারণ রবীন্দ্রনাথ শুধু শিল্পের ভাষায় নয়, মনুষ্যত্ব, সহমর্মিতা ও সাম্যের বাণী দিয়েছেন।”

শেখ হাসিনা রবীন্দ্রনাথের সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের কথাও স্মরণ করেন—প্রান্তিক মানুষের জন্য ক্ষুদ্রঋণ, সমবায়নীতি ও আধুনিক কৃষিপদ্ধতির প্রবর্তনকে তিনি বাংলার সমাজ উন্নয়নে এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন।

বর্তমান সময়ে রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে যে বিভাজন ও সংকীর্ণতা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, তার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “একাত্তরের পরাজিত শক্তি আজও সক্রিয়। সাম্প্রদায়িকতা ও সংস্কৃতি-বিরোধী চিন্তা দিয়ে তারা জাতিকে শিকড় থেকে ছিন্ন করতে চায়। রবীন্দ্রনাথ তাদের চোখে খলনায়ক, কারণ তিনি ছিলেন মানবতার কবি, বাঙালির প্রাণভোমরা।”

তিনি বাঙালির প্রতি আহ্বান জানান, “এই ক্রান্তিকালে রবীন্দ্রনাথের পথে ফিরে যেতে হবে। তাঁর গান, তাঁর বাণী, তাঁর দর্শন আমাদের শক্তি হয়ে উঠুক। দেশকে ভালোবাসতে হলে সংস্কৃতিকে ভালোবাসতেই হবে।”

বাণীর শেষাংশে শেখ হাসিনা বলেন,
“জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
আঁধার কেটে ভোর হোক।”