Wednesday 14 May, 2025

‘মানবিক করিডোর’: সার্বভৌমত্ব ঝুঁকি দেখছে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: 22:39, 13 May 2025

‘মানবিক করিডোর’: সার্বভৌমত্ব ঝুঁকি দেখছে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ

‘মানবিক করিডোর’: সার্বভৌমত্ব ঝুঁকি দেখছে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ

রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবকে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ । দলের নেতারা বলছেন, এই উদ্যোগ মানবিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল করার একটি কৌশল হতে পারে।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার।

তিনি বলেন, “রাখাইন রাজ্যের মতো সামরিক সংবেদনশীল এলাকায় মানবিক করিডোর চালু করলে তা দেশের নিরাপত্তার জন্য চরম ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। এর ফলে বাংলাদেশ চীন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “রাখাইনে মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে চীনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, এমনকি জাতিসংঘও এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কোনো চুক্তি করেনি।” তবে, এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার বাংলাদেশে প্রবেশের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

আব্দুস সাত্তার আরো বলেন, “আমরা এই ‘মানবিক করিডোর’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে। এটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

এছাড়া, দলটি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগকে ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী’ বলেও মন্তব্য করেছে। তারা মনে করে, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।

দলটি কাতারে অস্ত্রের যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং মার্কিন স্টারলিংক ইন্টারনেট চালুর প্রস্তাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দলটির নেতারা সতর্ক করেছেন যে, স্টারলিংক চালুর ফলে বাংলাদেশের তথ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে।

বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ দাবী জানিয়েছে, “এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি গণতান্ত্রিক ও নির্বাচিত সরকারের অধীনে হওয়া উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে।” তারা এই সব প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে, এসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি প্রকাশ এবং তা বাতিল করার আহ্বান জানায়।

দলটির নেতারা আরও বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষায় দ্রুত একটি গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রয়োজন।” সভায় দলের সভাপতি ইকবাল কবির জাহিদ, সম্পাদকীয় মন্ডলির সদস্য মোশাররফ হোসেন নালু, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।